মা মরিলে এতিম, বাবা মরিলে নয়।


পৃ
থিবীর শ্রেষ্ঠতম ও মধুময় ডাক হলো মা। প্রিয় এবং মূল্যবান শব্দ একটিই এবং একটিই মাত্র। মা পৃথিবীতে একমাত্র ব্যক্তি যে কিনা নিঃশর্ত ভালোবাসা দিয়েই যায় তার সন্তানকে কোনো কিছুর বিনিময় ছাড়া।
পৃথিবীটা অনেক কঠিন, সবাই সবাইকে ছেড়ে যায়, সবাই সবাইকে ভুলে যায়, শুধু একজন যে ছেড়ে যায় না ভুলেও যায় না। আর সারা জীবন থাকবে। সে মানুষটি হচ্ছে মা। মায়ের কোল যে কত বড় জিনিস তা একজন যোগ্য সন্তান ছাড়া আর কেউ জানে না। শত চিন্তা শত কষ্ট আপনার মাথায়, একবার মায়ের কোলে মাথা রাখেন দেখবেন সব চিন্তা দূর হয়ে যাবে। জগতে মায়ের মতো এমন আপনজন আর কে আছে। আসলে কোনো উপমাই মায়ের জন্য যথেষ্ট নয়। কোনো কিছুর তুলনা হতে পারে না মা। মা তো মা-ই। মায়ের গর্ভে সন্তান যেমন রক্ত চুষে নিরাপদে ধীরে ধীরে বড় হয়, তেমনি জন্মের পরও তিল তিল করে মা-ই কেবল তার নাড়ি ছেঁড়া ধনকে তিলে তিলে বড় করে তোলেন আগামীর সম্ভাবনাময় একজন মানুষ হিসেবে। জীবনের চরম সংকটকালে পরম সান্ত্বনার স্থল হিসেবে যার কথা প্রথম মনে পড়ে তিনি মমতাময়ী মা। মা প্রথম পৃথিবীর রং-রূপ-শব্দ-গন্ধ চেনান-দেখান-শেখান। 
কোন সন্তানে আছে বাবা অকালে মারা যায় মা-ই তখন তার সন্তানের বাবার দায়ীত্ব পালন করে। সন্তানের সুখের জন্য মা তার নিজের সুখ বিসর্জন দেয়। মা তার সন্তানকে বুকে আগলে রাখে। নিজে কষ্টকরে তিল তিল সন্তানের জন্য কাজ করে। মা কখন তার সন্তানকে ছেড়ে দেয় না। 
সন্তানের জন্য তুলনামূলকভাবে মা-ই বেশি ত্যাগ স্বীকার করেন। গর্ভধারণ, দুধপান, রাত জেগে সন্তানের তত্ত্বাবধানসহ নানাবিধ কষ্ট একমাত্র মা-ই সহ্য করেন। তা ছাড়া সন্তানের প্রতি মা-ই সবচেয়ে বেশি যত্নবান ও বেশি আদর-সোহাগ করে থাকেন। কোরআনে কারিমে আল্লাহপাক বলেন, আর আমি মানুষকে মায়ের সঙ্গে সদয় ব্যবহারের নির্দেশ দিয়েছি। তার মা তাকে অতি কষ্টে গর্ভে ধারণ করেছেন এবং অতি কষ্টে তাকে প্রসব করেছেন। তার গর্ভধারণ ও দুধপান ছাড়ানোর সময় লাগে ৩০ মাস। অবশেষে যখন সে তার শক্তির পূর্ণতায় পৌঁছে এবং ৪০ বছরে উপনীত হয়, তখন সে বলে, হে আমার রব, আমাকে সামর্থ্য দাও, তুমি আমার ওপর ও আমার মা এর ওপর যে নিয়ামত দান করেছ, তোমার সে নিয়ামতের যেন আমি কৃতজ্ঞতা আদায় করতে পারি এবং আমি যেন ভালো কাজ করতে পারি, যা তুমি পছন্দ করো। আর আমার জন্য তুমি আমার বংশধরদের মধ্যে সংশোধন করে দাও। নিশ্চয় আমি তোমার কাছে তাওবা করলাম এবং নিশ্চয় আমি মুসলিমদের অন্তর্ভুক্ত। -সুরা আহকাফ : ১৫
 

  অনেক নারী আছে যারা স্বামী মারা যাওয়ার পর সন্তানের সুখের জন্য আর দ্বিতীয়বার বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয় না। তারা তাদের সন্তানের জন্য নিজের জীবন বিলিয়ে দেয়। নিজের সুখের চিন্তা না করিয়া সব সময় সন্তানের সুখের চিন্তা করে। তারা কখন সন্তানকে বাবার অভাবে বুঝতে দেয় না। মা-ই তারা বাবা হয়। সন্তানের জন্য তারা সব করতে পারে। 
    আর কোন পুরুষের স্ত্রী মারা যাওয়ার কিছু দিন পরে তাদের স্ত্রীর অভাব হয়। তারা স্ত্রীর অভাব দুর করার জন্য আবার দ্বিতীয় বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। তখন তারা সেই স্ত্রীর সুখের চিন্তা করে। আর ঐ পুরুষের যদি পূর্বের স্ত্রীর কোন সন্তান থেকে থাকে তাহলে সে সন্তান ধিরে ধিরে তার পর হয়ে যায়। তারা সেই সন্তান ত্যাগ করে। সন্তানকে আর সন্তান হিসেবে পরিচয় দিতে চায় না। এমন অনেক পথ শিশু আছে যারা বেশির ভাগই মা হারা। 

এজকন মা হারা সন্তান জানে এই পৃথিবীতে মারা গেলে তার বাবা তার কতখানি আপন থাকে যদি সেই বাবা আবার দ্বিতীয় বিবাহ করে। 
তাই বলা যায় মা মরিলে এতিম হয় বাবা মরিলে নয়।

0 Comments

Stories are made up of my own feelings and events that have happened to me.

My writing habit, I write everything down so that everyone can read what I wear.